দিব্যেন্দু গোস্বামী (পশ্চিমবঙ্গ)
বীরভূম মানেই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্মক্ষেত্র শান্তিনিকেতন। আর যুগের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হবে না শান্তিনিকেতন। তা কি কখনো হয়? বসন্ত উৎসব হবে না বারবার এই শান্তিনিকেতন কে ঘিরে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই দিনটি পালিত হয় বীরভূমের বোলপুরে। সেখানেই রয়েছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তৈরি করা সেই শান্তিনিকেতন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন আজ আর নেই। যুগ পরিবর্তন হয়েছে আর সেই কারণে শান্তিনিকেতনের বসন্ত উৎসব আজ অনেকটাই ফিকে। বসন্ত উৎসবকে বর্তমানে সড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যারই প্রতিবাদ করেছেন ছাত্রছাত্রী থেকে প্রবীণ আশ্রমিকরা।প্রতিবছর দোল পূর্ণিমায় নানা রঙে রঙিন হয়ে ওঠে কবিগুরুর শান্তিনিকেতন। তবে আক্ষেপের সুর এতদিন শান্তিনিকেতনের মাঠেই বসন্ত উৎসব যা দোল , হোলি নামে পরিচিত। তা নিয়ে উৎসাহের কোন খামটি হয়নি। কিন্তু বর্তমানে পরপর দু’বছর শান্তিনিকেতনে অনুষ্ঠিত হলো না বসন্ত উৎসব। অনেকেই শান্তিনিকেতনে আসেন শুধুমাত্র বসন্ত উৎসব দেখার জন্য। কিন্তু বেশ কিছু লোকের পরামর্শে ঐতিহ্যবাহী এই রঙের উৎসব কে একেবারে বন্ধ করে দেওয়ার চক্রান্ত চালিয়েই যাচ্ছে। শান্তিনিকেতন থেকে বসন্ত উৎসব অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ফলে উৎসবটা আজ আর সেই উৎসবের মধ্যে পড়ে না। রবীন্দ্রনাথের বসন্ত উৎসব আজ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালী পণায় পরপর দু’বছর বসন্ত উৎসব হলো না শান্তিনিকেতনে। কি কারনে অন্যান্য বছরগুলিতে শৃঙ্খলা বদ্ধভাবে জেলা রাজ্য এমনকি বিদেশ থেকেও বহু পর্যটক আসতেন এই বসন্ত উৎসবে। কিন্তু শান্তিনিকেতনে এখন আর বসন্ত উৎসব নেই। যার ফলে বিদেশ থেকে আসা বহু পর্যটকরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এই নিও কারোর কোন মাথা ব্যথা নেই। অতিমারি কোভিডের সময় বন্ধ ছিল বসন্ত উৎসব।এবারেও অনিশ্চিতের মুখে ঐতিহ্যের বসন্তোৎসব অনুষ্ঠিত হবে না শান্তিনিকেতনে এমনই মনে করা হচ্ছিল। অবশেষে ঠিক সেটাই ঘটলো। এখনও পর্যন্ত উৎসব নিয়ে কোনও বৈঠক হয়নি। শুরু হয়নি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মহড়াও।এমনকী, বসন্তোৎসব নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।সবমিলিয়ে ২৫ মার্চ বিশ্বভারতীতে বসন্তোৎসব হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই পড়েনি নজরে। যা নিয়ে আক্ষেপ পড়ুয়া-সহ বোলপুর-শান্তিনিকেতনে আসা বহু পর্যটকদের। সকাল থেকেই বিশ্বভারতীর পাশে রতন পল্লীর মাঠে এবারও শুরু হয়েছে বসন্ত উৎসব বা দোল উৎসব। বসন্ত উৎসব বিশ্বভারতীতে যে পরিমাণে লোকের সমাগম হয় সেই পরিমাণ লোক না হলেও রতন পল্লীর বসন্ত উৎসব দেখেই তারা বাড়ি ফিরছেন। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের গানের সঙ্গে নাচ আবির খেলা এবং শেষ প্রান্তে হোলির যে রং সেই রং সবাই সবাইকে লাগিয়ে দিয়ে আজকের দিনটি উদযাপন করলেন। সকলেই তবে কবিগুরুর ফটোতে আবীর না দিয়েই শেষ হলো বসন্ত উৎসব।