নারকেলডাঙা এলাকায় একটি-দু’টি নয়, ১৪টি বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলতে কলকাতা পুরসভাকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি অমৃতা সিংহ জানান, অবিলম্বে কলকাতা পুরসভাকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। আগামী সাত সপ্তাহের মধ্যে ওই ১৪টি বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে বলেও নির্দেশে উল্লেখ করেছেন তিনি। একই এলাকায় এতগুলি বেআইনি নির্মাণ গড়ে উঠলেও এত দিন পুরসভা কী করছিল, এ দিন কার্যত সেই প্রশ্নও তুলেছেন বিচারপতি সিংহ।
প্রসঙ্গত, খাস কলকাতার বিভিন্ন তল্লাটে বেআইনি নির্মাণ নতুন কোনও ব্যাপার নয়। দিনের আলোয় বেআইনি নির্মাণ গড়ে উঠলেও পুলিশ এবং পুর প্রশাসনের সে সব নজরে আসে না বলেই অভিযোগ। এ নিয়ে হাই কোর্টে একাধিক মামলাও হয়েছে। সম্প্রতি গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ে ১৩ জন মারা যাওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে নড়ে বসেছে পুরসভা।
আদালতের খবর, নারকেলডাঙা তল্লাটে, পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে একাধিক বেআইনি বহুতল গড়ে ওঠার অভিযোগে মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় পুরসভার আধিকারিকদের ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিনে অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। পুরসভার সেই অনুসন্ধানেই ১৪টি বেআইনি নির্মাণের কথা সামনে এসেছে।
এ দিন পুরসভার তিন জন ইঞ্জিনিয়ার রিপোর্ট দিয়ে জানান যে, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ক্যানাল ইস্ট রোডে মোট ১৪টি নির্মাণ আছে, যেগুলির কোনও অনুমতি নেই। বিষয়টি শোনার পরেই বিচারপতি সিংহ প্রশ্ন তোলেন, ‘‘এত দিন ধরে তা হলে পুরসভা কী করছিল?’’
পুরসভার আইনজীবী জানান, পুর আইনের ৪০১ নম্বর ধারায় ইতিমধ্যেই ওই বেআইনি নির্মাণগুলির মালিকদের নোটিস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এত দিন পুরসভা কী করছিল এবং কী ভাবে তাদের নজর এড়িয়ে ১৪টি বেআইনি নির্মাণ গড়ে উঠল, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা পুর কৌঁসুলির মুখে শোনা যায়নি।
প্রসঙ্গত, এই নারকেলডাঙা এলাকাতেই একটি বেআইনি ছ’তলা বাড়ি ভাঙা নিয়ে আদালতে পরস্পরের উপরে দায় চাপিয়েছিল কলকাতা পুরসভা এবং কলকাতা পুলিশ। নারকেলডাঙা থানা আদালতের নির্দেশ পালনে গড়িমসি করায় সংশ্লিষ্ট ওসিকে এজলাসে সশরীরে হাজিরা দিতেও নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সিংহ।