কচ্ছথিবু দ্বীপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অভিযোগের বিরুদ্ধে ফের সুর চড়ালেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। গত রবিবার দ্বীপটি নিয়ে কংগ্রেসের দিকে আঙুল তোলেন মোদী। ১৯৭৪ সালে ইন্দিরা গান্ধী কেন ওই ক্ষুদ্র দ্বীপটিকে শ্রীলঙ্কার হাতে তুলে দিয়েছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। এক্স হ্যান্ডলে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, কংগ্রেসকে বিশ্বাস করা যায় না, তারা ‘ভাবলেশহীন’ ভাবে অন্যের কষ্ট বা অনুভূতিকে গুরুত্ব না দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপ শ্রীলঙ্কাকে দিয়েছিল। সে দিনই মুখ খুলেছিলেন স্ট্যালিন। বলেছিলেন, ভোটের মুখে ভয় পাচ্ছে বিজেপি। এ দিন ফের বললেন, গত দশ
বছরে দ্বীপটি শ্রীলঙ্কার হাত থেকে ফেরত নেওয়ার জন্য ঠিক কী করেছেন মোদী!
প্রধানমন্ত্রী যে দিন ইন্দিরা গান্ধীর প্রসঙ্গ তোলেন, পরের দিনই, অর্থাৎ সোমবার বলেন, ‘‘তামিলনাড়ুর ভালর জন্য কিচ্ছু করেনি স্ট্যালিনের দল।’’ জবাবে স্ট্যালিন জানিয়েছেন, তাঁর দাবি, মোদী দ্বীপটিকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনুন। তিনি প্রশ্ন করেছেন, মোদী কি কোনও দাবি জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার কাছে? স্ট্যালিন বলেন, ‘‘বিজেপি যখন ক্ষমতায় এসেছিল, তখন কচ্ছথিবু নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে কী বলেছিল? ওরা বলেছিল, এই দ্বীপ শ্রীলঙ্কার থেকে ফেরত চাওয়া হলে, তা যুদ্ধের দিকে গড়াবে। গত দশ বছরে কত বার শ্রীলঙ্কা গিয়েছেন মোদী? দ্বীপটি ফেরত দেওয়ার জন্য এক বারও উনি শ্রীলঙ্কার কাছে দাবি জানিয়েছেন? শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে যখন দেখা করেছেন মোদী, তিনি কি বলেছেন কচ্ছথিবু ভারতের? এক বারও কচ্ছথিবুর কথা বলেননি উনি।’’
স্ট্যালিন আরও বলেন, ‘‘নেহরু, ইন্দিরা গান্ধীর সময়ে কী ঘটেছিল, মোদীর স্পষ্ট সব কিছু মনে রয়েছে। আমি জানতে চাই, দু’বছর আগের ঘটনা ওঁর মনে আছে কি না। উনি যখন চেন্নাই এসেছিলেন, আমি বেশ কিছু দাবিদাওয়া জানিয়েছিলাম ওঁর কাছে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল, কচ্ছথিবু ফিরিয়ে আনা। আপনার মনে আছে? এই মর্মে আমি যে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম ওঁকে, সেটা কি আদৌ পড়ে দেখেছিলেন?’’
মোদীকে কটাক্ষ করে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘কচ্ছথিবু নিয়ে মোদী যা বলছেন, সেটা তাঁর জন্যই খারাপ হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ওঁরা মৌচাকে হাত দিয়েছেন। এখন পালানোর চেষ্টা করছেন।’’
২০১৫ সাল নাগাদ, বর্তমান বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর তখন বিদেশ সচিব ছিলেন। সেই সময়ে তথ্যের অধিকার আইনে করা একটি মামলায় জয়শঙ্কর বলেছিলেন, কচ্ছথিবু ভারতের অংশ নয়। সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে স্ট্যালিন বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের জন্য এখন এই সব প্রসঙ্গ টেনে আনছে বিজেপি।’’
ডিএমকে-র অভিযোগ চুপচাপ শুনে যায়নি বিজেপি। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন পাল্টা বলেছেন, কচ্ছথিবু নিয়ে ডিএমকে ‘ভুয়ো প্রচার’ করছে। ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য’ করছে। তাঁর কথায়, ‘‘১৯৭০-এর দশকে প্রয়াত নেতা এম করুণানিধি ডিএমকে প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। কংগ্রেস কী পদক্ষেপ করছে, তা জানতেন করুণানিধি। তাও তিনি বাধা দেননি।’’