বাংলার নিজের খবর,বাঙালির খবর

মুনীশকে নিয়ে ‘ক্ষোভ’ বহাল প্রদেশ কংগ্রেসে

দার্জিলিঙের কংগ্রেস প্রার্থীকে নিয়ে দলের অন্দরে ‘অসন্তোষ’ কাটছে না। বিশেষ করে, মুনীশ তামাং এবং ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অংশীদার পাহাড়ের হামরো পার্টির অজয় এডওয়ার্ড আলাদা রাজ্যের প্রবক্তা হওয়ায় দলের মধ্যে অস্বস্তি ছড়িয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, কংগ্রেস প্রার্থী মুনীশ ভারতীয় গোর্খা পরিসঙ্ঘের সভাপতি ছাড়াও ‘ন্যাশনাল ফেডারেশন ফর নিউ স্টেটস’ নামক সংগঠনের সভাপতিও। তিনি পরিসঙ্ঘ ছাড়ার কথা বললেও, পরের সংগঠনটি ছাড়ার কথা বলেননি। এতে সমতলের কংগ্রেসিদের অনেকেরই বিষয়টি নিয়ে আপত্তি রয়েছে। আলাদা রাজ্যের দাবি বার বার উঠলে তা যে দলের জন্য ‘অস্বস্তির’ জায়গায় পৌঁছবে তা নেতারা জানেন। ওই নেতারা প্রকাশ্যে কেউ কিছু না বললেও সেখানে দলের এই প্রার্থীর হয়ে সমতলে প্রচারে কতটা সাড়া মিলবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

এর মধ্যেই আজ, বৃহস্পতিবার দার্জিলিঙের নির্বাচনী দফতরে মনোনয়ন জমা দেবেন মুনীশ তামাং। তিনি বুধবার দুপুরে বহরমপুরে জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন। মুনীশ বলেন, ‘‘বিজেপি গোর্খাল্যান্ড নিয়ে মিথ্যা কথা বলেছিল। তার পরে ইস্তাহারে লিখেছিল স্থায়ী সমাধান করবে। তবে আলাদা রাজ্যের দাবিকে শ্রদ্ধা করি। সংবিধান মেনে যে প্রক্রিয়ায় সমাধান হবে সেই প্রক্রিয়ায় কাজ করব।’’ যদিও এ দিনই বহরমপুরে হাজির থাকা রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘কংগ্রেস ৫৫ বছর রাজত্ব করেছে। করে দেয়নি কেন? বহরমপুরের মানুষ যদি রাজ্য ভাগ চান, তা হলে অধীর চৌধুরীকে ভোট দেবেন।’’ অধীর বলেন, ‘‘আমরা কোনও দিন গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন করিনি, করবও না।’’

কংগ্রেস সূত্রের খবর, ‘ইন্ডিয়া’ জোটে যোগ দিয়েই কংগ্রেসের মঞ্চ থেকেই অজয় এডওয়ার্ড আলাদা রাজ্যের কথা বলেন। তা নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েন দলের দিল্লি নেতৃত্ব। কেউ কোনও দাবি করতেই পারেন এবং কংগ্রেস তা নিয়ে আলোচনার পক্ষপাতী বলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে পবন খেড়া পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন। দার্জিলিঙে ফিরে অজয়ের মুখে আরও এক বার আলাদা রাজ্যের কথা শোনা গিয়েছে। যদিও মুনীশ নতুন করে কোনও মন্তব্য করেননি। পাহাড়ে কংগ্রেসের নেতাদের একটা অংশ মনে করেন, আলাদা রাজ্যের দাবি ছাড়া, পাহাড়ে রাজনীতি করা যায় না। প্রতিটি দলকেই তা বলতে হয়। রাজ্যের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-তএ বসেও অনীত থাপারা ‘আলাদা রাজ্য পাহাড়ের ভবিষ্যতের রাস্তা’, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের বিবেচনাধীন’ বলে এড়িয়ে যান।

কারণ, নেতারা মনে করেন, পাহাড়ে আলাদা রাজ্যের কথা বললে, আবেগের বশে পাহাড়বাসীদের ভোট পাওয়া সহজ। কিন্তু তাতে সমতলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। উত্তরবঙ্গের বাকি সাতটি আসন তো বটেই, রাজ্যের অন্যত্রও বাংলা ভাগের দাবিদার হিসাবে তকমা লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রদেশ কংগ্রেসের পাহাড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিনয় তামাং প্রথম থেকে মুনীশ এবং অজয়ের বিরোধী। তিনি বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস গোটা দেশের দল। পাহাড়ে আজ অবধি যা হয়েছে, সবই কংগ্রেসের সরকারের আমলে। আর ভুল লোকের কথায় প্রার্থী ঠিক করে ভোটে গেলে ফল ভাল হবে না বলেই মনে হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, কংগ্রেস বিভেদের রাজনীতি করে না, এটা সবাইকে বুঝতে হবে। সবাইকে জোড়ার কথা বলেছেন রাহুল গান্ধী। তার উল্টো বার্তা কেউ দিলে, দলের ক্ষতি।

মিডিয়া
16,985FansLike
2,458FollowersFollow
61,453SubscribersSubscribe
Must Read
Related News