একটার পর একটা ফাঁড়া বিজেপির সামনে। এবারে রাজপুত-ক্ষত্রিয় ভোটব্যাঙ্কে ব্যাপক ধস নামার আতঙ্কে ভুগছে গেরুয়া শিবির। লোকসভা নির্বাচনের মুখে বিজেপির বিরুদ্ধে রীতিমতো বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন রাজপুত-ক্ষত্রিয়রা। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, অনেক হয়েছে, আর নয়। যে দল যেখানে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে বিজেপির দিকে, রাজপুত বা ক্ষত্রিয় সমাজ সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দেবে সেই দলের দিকেই।
কারণটা কী? তাঁদের নিশ্চিত ভোটব্যাঙ্কের ভরসায় বিজেপি বারবার ভোট-বৈতরণী পার হলেও, বাস্তবে রাজপুত-ক্ষত্রিয়দের কিন্তু তারা আদৌ গুরুত্ব দেয় না বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, প্রকৃত ইতিহাস না জেনেই বিজেপির লোকজন রাজপুত-ক্ষত্রিয়দের সম্পর্কে অনেক অসম্মানজনক মন্তব্য করে থাকেন। তার জ্বলন্ত উদাহরণ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গুজরাতের রাজকোটের বিজেপি প্রার্থী পুরুষোত্তম রূপালা এক জনসভায় রাজপুত সমাজকে ‘ঘটিয়া’ বলে মন্তব্য করেছেন। যার অর্থ রাজপুতরা খারাপ। এতেই বিজেপির উপরে ব্যাপক চটেছেন রাজপুত-ক্ষত্রিয়রা। বিভিন্ন রাজ্যে পথ অবরোধ করে, কুশপুতুল পুড়িয়ে এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে উগরে দিয়েছেন ক্ষোভ। বিক্ষোভে অংশ নেন মহিলারাও। অবিলম্বে রূপালাকে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
উৎস রাজস্থান হলেও গুজরাট, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে ক্ষোভের আগুন। এইসব রাজ্যে যথেষ্ট প্রভাবশালী রাজপুত-ক্ষত্রিয়রা। উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরে দিন দুয়েক আগেই এই নিয়ে ডাকা হয়েছিল মহাপঞ্চায়েত। বিভিন্ন রাজ্য থেকে এই সমাজের মাথারা অংশ নিয়েছিলেন এই সম্মেলনে। উপস্থিত হয়েছিলেন বিভিন্ন কিসান সংগঠনের নেতারাও। ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিজেপির বিরুদ্ধে। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পথ ঠিক করতে ১৬ এপ্রিল মীরাটে আবার ডাকা হয়েছে মহাপঞ্চায়েত। এই সম্মেলনে আলোচনা হবে, বিজেপি কীভাবে বিভিন্ন সময়ে মোগলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাজপুত-ক্ষত্রিয় সমাজের অবদানকে ব্যঙ্গ করেছে। মহিলাদেরও অসম্মান করেছে। এর যোগ্য জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হবে মহাপঞ্চায়েতে। প্রথমে অবশ্য এই ক্ষোভকে তেমন একটা গুরুত্ব দিতে চায়নি বিজেপি। ভেবেছিল সময় এলেই সব ম্যানেজ হয়ে যাবে। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের মুখে পরিস্থিতি যেদিকে মোড় নিচ্ছে তাতে সত্যিই ঘুম ছুটে গিয়েছে গেরুয়া শিবিরের।