উত্তরের আলুচাষিদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছেই। কোচবিহার, তুফানগঞ্জ, বক্সিরহাট এরপর মাথাভাঙ্গা দুই নম্বর ব্লকের নিশিগঞ্জে কোচবিহার-মাথাভাঙ্গা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন আলুচাষিরা। বিক্ষোভের জেরে প্রায় ৩ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। দুপুরে বৃষ্টির মধ্যে পথ অবরোধে শামিল হন কয়েকশো কৃষক। তাঁদের দাবি, হয় ভিনরাজ্যে আলু পাঠানোর নিষেধাজ্ঞা তুলুক, না হয় ন্যায্যমূল্যে সরকার কৃষকদের হিমঘরে মজুত আলু কিনে নিক।
পরে মাথাভাঙ্গা-২’এর বিডিও অর্ণব মুখোপাধ্যায়, ব্লক সহ কৃষি আধিকারিক মলয় মণ্ডল, মাথাভাঙ্গার এসডিপিও সমরেণ হালদার, মাথাভাঙ্গা থানার আইসি হেমন্ত শর্মা ও নিশিগঞ্জ ফাঁড়ির ওসি সৌগত দাস অবরোধস্থলে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে কৃষকদের দাবি জেলা প্রশাসনের নজরে আনার আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়।
এদিন আন্দোলনকারী কৃষক জামির আলি মিয়াঁর কথায়, ‘অসমের সীমানা দিয়ে আলু পাঠাতে দিচ্ছে না পুলিশ। আর স্থানীয় পাইকাররা আলু না কেনায় মজুত আলু বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না।’ পরিমল সরকার নামে প্রেমেরডাঙ্গার এক কৃষকের দাবি, ‘এক মাস ধরে আমরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছি। প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হলেও সমস্যার সুরাহা হয়নি। এখনও পঞ্চাশ শতাংশের বেশি আলু হিমঘরে মজুত। এত আলুর চাহিদা স্থানীয় বাজারে নেই। দ্রুত ভিনরাজ্যে আলু পাঠানোর দাবি করছি।’
কৃষকদের আন্দোলনে এদিন কোচবিহার জেলা আলু, পাট, ধান চাষি সংগ্রাম কমিটিও শামিল হয়। সংগঠনটির জেলা সম্পাদক নৃপেন কার্জি বলেন, ‘আলুচাষি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্বার্থে সরকার ভিনরাজ্যে আলু পাঠানোর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিক। বিকল্প হিসাবে আলু কিনে ভরতুকি দিয়ে বাজারে বিক্রি করুক।’
প্রসঙ্গত, স্থানীয় খুচরো বাজারে এখন আলুর দাম প্রতি কেজি ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা। এই পরিস্থিতিতে পাইকাররা হিমঘরে মজুত আলু কিনতে চাইছেন না। অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের ভিনরাজ্যে আলু না পাঠানোর নির্দেশে সমস্যায় পড়েছেন কৃষকরা।