সেই প্রাচীনকাল থেকেই পানের প্রচলন আছে। এমনকি আদি বাঙলা কাব্য ‘চর্যাপদ’এ পানের উল্লেখ আছে। দিনে ২/৩ টে পান পাতার রস শরীরের নানা উপকার করে। পান পাতায় আছে প্রচুর স্বাস্থ্যগুণ। ভিটামিন সি, থায়ামাইন, নিয়াসিন, রাইবোফ্ল্যাবিন এবং ক্যারোটিন সমৃদ্ধ পানপাতা ক্যালসিয়ামে ভরপুর ৷
পানপাতা সুগন্ধি ৷ মধুমেহ রোগে পানপাতা কার্যকর ৷ এতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রিত হয়। পানপাতার প্রভাবে দেহের মেটাবলিক হার বৃদ্ধি পায় ৷ ফলে যাঁরা বাড়তি ওজন ঝরিয়ে রোগা হতে চান, তাঁদের জন্য পানপাতা কার্যকর ৷ ১০ থেকে ১২ টা পানপাতা সিদ্ধ করে ফুটিয়ে নিন ৷ এ বার ওই মিশ্রণে মধু মিশিয়ে পান করুন ৷ এতে মুখের ভিতরে স্বাস্থ্য বজায় থাকে ৷ কারও মুখে দুর্গন্ধের সমস্যা থাকলে, দূর হয় সেটাও ৷
পানপাতাকে গরমজলে ফুটিয়ে সেই মিশ্রণ দিয়ে গার্গলও করতে পারেন৷ অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যের জন্য পানপাতা দাঁত ও মাড়ির জন্য উপকারী৷ দাঁতের ক্যাভিটি, অন্যান্য সমস্যা এবং মাড়ির সংক্রমণে পানপাতার রস খুবই কার্যকর৷ দাঁত ও মাড়ির যন্ত্রণা, ফুলে ওঠাতেও ঘরোয়া টোটকা হিসেবে পানপাতার রস ব্যবহার করতে পারেন৷ ছোটখাটো ক্ষতের ক্ষেত্রে ব্যান্ডেজের পরিবর্তে হাতের কাছে পাওয়া পানপাতা খুবই কার্যকর৷ এতে আঘাত ও যন্ত্রণা দুই-ই প্রশমিত হয় ৷ আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে পানপাতার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ৷ এছাড়াও আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের পরামর্শ, শরীরকে টক্সিনমুক্ত করতে পানপাতা কার্যকর৷ ফাইবার সমৃদ্ধ পানপাতা ব্যবহৃত হয় কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধেও৷
এক গ্লাস উষ্ণ জলের সঙ্গে পানপাতা চিবিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়৷ পানপাতার রস ছেঁকে পান করলে পরিপাক ক্রিয়া উন্নত হয়৷ বাচ্চাদেরও দিনে দু’বার এই মিশ্রণ দেওয়া হয় হজমশক্তি মজবুত করতে৷ দীর্ঘদিনের অরুচির সমস্যাও কাটিয়ে ফেলতে পারেন পানপাতার রসে৷ যাঁদের একটুতেই গা বমি বমি লাগে, তাঁদের ক্ষেত্রেও পানপাতার রস উপকারী৷ পানের রসে বমি সমস্যার উপশম হয়৷ তবে সতর্কবাণী আছে কিছু। যেমন পানের সাথে খুব অল্প সুপরি,চুন চলতে পারে কিন্তু জর্দা একদম নয়। আর দিনে বড়জোর গোটা চারেক পর্যন্ত পান খান,তার বেশি নয়।