আমেরিকান সাইকোলজি অ্যাসোসিয়েশনের ২০২৩ সালের গবেষণা বলছে, বর্তমান বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ক্রমাগত কাজে গড়িমসি করেন। শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সেটা আরও ভয়াবহ। হাতে তো অনেক সময় আছে,ওই কাজটা পড়ে করবো বা আধ ঘন্টায় পড়া শেষ করে নেবো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেলো কয়েক ঘন্টাতেও পড়া শেষ করা গেল না। এই যে ‘পড়ে করবো’ মানসিকতা একেই মনোবিদেরা বলছেন প্রক্রাস্টিনেশন’। বাংলায় যার মানে হচ্ছে ‘গড়িমসি’। বিশেষ্যটির ভাবার্থ হচ্ছে ঢিলেমি, টালবাহানা কিংবা হচ্ছে-হবে ভাব। এই ব্যাধি থেকে নিজেকে মুক্ত করার জন্য ৫টি টিপস দিয়েছেন মনোবিদরা। ১) কম কিংবা বেশি ‘আশাবাদী’, কোনোটাই হওয়া যাবে না – বিখ্যাত মনোবিদ ডাঃ স্টিল বলেন, ‘কোনো কাজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আপনি যত বেশি অনিশ্চিত হবেন, কাজটি শুরু করা ততটাই কঠিন মনে হবে।’ অতিরিক্ত আশাবাদী মনোভাব মানুষের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে। ফলে সে সময়কে অবমূল্যায়ন করে।
আবার কাজের ভবিষ্যতের প্রতি কম আশাবাদী হলে কাজের আগ্রহও কমে যায়। ২) কাজের পর নিজেকে নিজেই পুরস্কৃত করুন – খুব ছোটবেলায় আপনি যখন অসুস্থ অবস্থায় তিতা কোনো ওষুধ খেতে চাইতেন না, তখন মা আপনাকে লজেন্সের লোভ দেখাতেন। আর আপনিও ভালো মানুষের মতো ওষুধটা খেয়ে নিতেন। একই উপায়ে কাজের প্রতি নিজের গড়িমসি দূর করতে কাজ শেষে নিজেই নিজেকে দিতে পারেন ছোট-বড় কোনো উপহার। এতে কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়বে। ৩) কাজটিকে ভালোবাসুন, নয়তো ছেড়ে দিন – মানুষ তার অপছন্দের কাজের প্রতিই বেশি গড়িমসি করে। সে জন্য যে ব্যক্তি যে কাজে উৎসাহী, সে কাজটিই তার বেছে নেওয়া উচিত। তবে অপছন্দের কাজটি ছেড়ে দেওয়া সম্ভব না হলে কাজের একঘেয়েমি এড়ানো যেতে পারে।
৪) কঠিন কাজগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিন – কাজকে ভয় না পেয়ে সহজ করে নিন। মনে মনে ভাবুন যে আমি পারবো। তাই কঠিন কাজগুলো আগে বেছে নিন। ৫) নিয়ন্ত্রণ করুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার – ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক আর ইউটিউবে স্ক্রলিং করতে, মজার কোনো ছবি বা ভিডিও দেখার ক্ষেত্রে কেন জানি আমরা কেউই গড়িমসি করি না, উল্টো দরকারি কাজ ফেলে রেখে এসবে আসক্ত হয়ে থাকি।’ বলেন শিক্ষার্থী রুকাইয়া হাসান। তাই সময়ের অপচয় রোধে কাজ ফেলে কিংবা কাজের ফাঁকে এগুলোর ব্যবহার থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। মুঠোফোনের ‘স্ক্রিন-টাইম’ অপশনে অ্যালার্ম সেট করে নিজেই নিজেকে সতর্ক করতে পারেন।