জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের পাশ দিয়ে বহমান খরস্রোতা তোর্সা নদীতে ভেসে যাওয়া এক হস্তীশাবককে চার বছর আগে উদ্ধার করেছিল জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের কর্মীরা। সেই হস্তিশাবক ‘বীর’ কে বাঁচিয়ে তোলার ইটিভি ভারতের সঙ্গে ভাগ করলেন জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান বিভাগের আধিকারিক পারভীন কাসোয়ান। তার কথায় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বর্ষা শেষ হওয়ার পর, তখনও তোর্সা নদীতে দুকূল ছাপানো জলরাশি, সঙ্গে প্রবল স্রোত।
তেমনই একটি দিনে, জাতীয় উদ্যানের কোদাল বস্তি রেঞ্জের বন কর্মীরা নদীতীরে টহল দেবার সময় মাত্র কয়েক দিনের একটি হস্তীশাবককে নদীতে ভেসে যেতে দেখেন। নজরে পড়তেই বনকর্মীরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে প্রবল স্রোতের মধ্যেই তোর্সাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন শাবকটিকে উদ্ধার করতে। বেশ কয়েক ঘন্টার প্রচেষ্টায় তারা শাবকটিকে খুব দুর্বল অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হন।যদিও শাবকটির আশেপাশে সেসময় মা হাতির কোনো খোঁজ মেলেনি।
এরপর ওই শাবকের স্থান হয় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের পিলখানায়।চার বছর ধরে শাবকটিকে প্রায় মানব শিশুর মত চিকিৎসা ও যত্ন করে বড় করা হয় । প্রথম দিকে শাবকটিকে ল্যাকটোজেন দুধ এবং ফল খাওয়ানো হত। পরে,ঘাসপাতা সহ অন্যান্য খাবার দেওয়া হয়।এই শাবকটিকে ভালোবেসে বড় করার পেছনে যার অবদান সব থেকে বেশি, তিনি হলেন চেরন সুব্বা। তিনি শাবকটিকে উদ্ধার করে আনবার দিন থেকে প্রথম চারমাস শাবকটির যত্ন নিতে তার সঙ্গে পিলখানাতেই ঘুমোতেন।
তবে বর্তমানে তার দেখাশোনা করছেন রোহিত ইসলাম। বর্তমানে জাতীয় উদ্যানে এমন উদ্ধার হওয়া চারটি হস্তী শাবক আছে এবং সবগুলোর মধ্যে এই ‘বীর’ সবচেয়ে সুস্থ্ ও সক্রিয় হস্তীশাবক।বনকর্মীদের এই চার বছরের ভালোবাসা ও পরিশ্রম নদীর স্রোতে ভেসে যাওয়া একটি অনাথ হস্তীশাবককে যেভাবে বড় করে তুললো তা প্রশংসার দাবি রাখে বলে জানিয়েছেন DFO পারভীন কাসোয়ান।