মেয়ের ১০ টাকার আবদার মেটাননি মা। অভিমানে শনিবার ভোরে রান্নাঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হল সপ্তম শ্রেণির এক পড়ুয়া। সকালে রান্নাঘরে তার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের লোকজন ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে রায়গঞ্জ মেডিকেলে নিয়ে এলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেয় রায়গঞ্জ থানার পুলিশ।
মৃত নাবালিকার নাম সংগীতা রায় (১৪)। বাড়ি রায়গঞ্জ ব্লকের বড়ুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রারিয়া গ্রামে। স্থানীয় হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া ছিল সে। শুক্রবার স্কুলে যাওয়ার সময় মায়ের কাছে টিফিন বাবদ ১০ টাকা চেয়েছিল। সেই টাকা না দেওয়ায় মায়ের উপর অভিমান হয় তার। সেদিন রাতে ভাতও খায়নি। খাবার খাওয়ার জন্য মা একাধিকবার সাধাসাধি করলেও সে সাড়া দেয়নি। পরিবারের দাবি, শনিবার ভোরে রান্নাঘরে ওড়নায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয় সংগীতা। সংগীতার বাবা প্রশান্ত রায় দিল্লিতে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কর্মরত।
মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে রায়গঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। মা তিলোত্তমা রায় বলেন, ‘শুক্রবার মেয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় টিফিন খরচ বাবদ ১০ টাকা চেয়েছিল। কিন্তু আমার কাছে টাকা ছিল না। সেই টাকা না দেওয়ায় আমার উপর অভিমান করে রাতে ভাতও খায়নি। কে জানত ১০ টাকার জন্য মেয়েটা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হবে!’ মৃত নাবালিকার দাদা শংকর রায় বলেন, ‘ভোরের দিকে বাথরুমে যেতে গিয়ে দেখি, শোয়ার ঘরের দরজা খোলা। এদিক-ওদিক খুঁজতেই দেখি, রান্নাঘরের সিলিংয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে বোন।
আমি চিৎকার চ্যাঁচামেচি জুড়ে দিলে পরিবারের বাকি সদস্যরা ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ওকে মৃত ঘোষণা করেন।’ এই ঘটনায় রায়গঞ্জ থানার পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ পার্থসারথি রায় বলেন, ‘কোনও একটি মাত্র কারণেই যে একটি কম বয়সী ছেলে কিংবা মেয়ে আত্মহত্যা করে এমনটা নয়। এর পেছনে আরও বেশ কিছু কারণ কাজ করে।’