বাংলায় আর জি কর কাণ্ডের পর থেকেই রাজনীতির ঘৃণ্য আগুনে লাভের রুটি সেঁকে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিজেপি। কুৎসা, অপপ্রচার, ভুয়ো খবর রটানো, কোনওকিছুই বাদ রাখেনি তারা। অথচ দেশের বিজেপিশাসিত ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্যগুলি থেকে প্রায় প্রত্যহই আসছে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের খবর। এবার দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেই যৌন নিগ্রহের ঘটনা ঘটল। শুধু তাই নয়, জাত তুলে গালিগালাজও করা হয়েছে হাসপাতালের এক মহিলা নিরাপত্তাকর্মীকে।
হাসপাতালের চিফ সিকিউরিটি অফিসারের বিরুদ্ধেই এই অভিযোগ এনেছেন ওই মহিলা নিরাপত্তাকর্মী। ঘটনাটি দিল্লীর অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসের। হাসপাতালের চিফ সিকিউরিটি অফিসার দিগ্বিজয় সিং এক মহিলা নিরাপত্তারক্ষীকে যৌন নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷ ঘটনার পরে ওই মহিলা নিরাপত্তাকর্মী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন৷ অর্থাৎ দেশের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালের রোগী-চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার মূল দায়িত্ব যাঁর হাতে, সেই চিফ সিকিউরিটি অফিসারেরই যৌন নির্যাতনের শিকার হলেন তাঁরই অধীনস্থ এক মহিলা নিরাপত্তারক্ষী।
স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় গোটা রাজধানী। দিল্লীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব যেহেতু কেন্দ্রের হাতে সেই কারণে অভিযোগের আঙুল উঠেছে অমিত শাহর পুলিশের দিকেই। এইমসের মতো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় হাসপাতালের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা রক্ষায় কেন উদাসীন দিল্লীর পুলিশ? উঠছে প্রশ্ন।
প্রসঙ্গত, ঘটনাটি ঘটেছে গত ২ অক্টোবর। রাতের ডিউটি বদলের আর্জি জানিয়ে চিফ সিকিউরিটি অফিসারের অফিসে গিয়েছিলেন ওই মহিলা। তখনই তাঁকে চিফ সিকিউরিটি অফিসার জাত তুলে গালাগালি দিয়ে যৌন নির্যাতন করে বলে অভিযোগ। এখানেই শেষ নয়, সহকর্মীদের সামনেই তাঁকে কাজ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ছাড়াও, পরের দিন নির্যাতিতা অভিযোগ জানান তফসিলি জাতীয় কমিশনের কাছে।
রাজধানী জুড়ে নিন্দা এবং সমালোচনার ঝড় ওঠায় তড়িঘড়ি দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এইমস কর্তৃপক্ষ৷ সাতদিনের মধ্যে গোটা ঘটনার তদন্ত করে এইমস-এর নির্দেশকের কাছে রিপোর্ট পেশ করবে এই কমিটি, জানানো হয়েছে এইমস-এর তরফে৷ পুরো ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক৷ পুরোপুরি নীরব বিজেপি নেতারাও৷ দিল্লী এইমস-এর মতো সুপার স্পেশালিটি কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালে কর্মরত মহিলাদের নিরাপত্তাহীনতার ইস্যু কয়েক মাসেই মধ্যেই দিল্লী বিধানসভা নির্বাচনে বড় ইস্যু হয়ে উঠতে পারে বুঝেই নীরব বিজেপি নেতারা, দাবি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের৷ তবে বিজেপির অঙ্গুলিহেলনেই গোটা ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা করছে এইমস কর্তৃপক্ষ, এমনই মনে করছে সাধারণ মানুষ।