গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের পথে হাঁটল নবান্ন। রাজ্যে নতুন মৌজা ম্যাপ তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১০০ বছর বাদে আবার নতুন করে এই কাজ শুরুর পরিকল্পনা করা হয়েছে। শেষবার এই মৌজা ম্যাপ (যা ‘ক্যাডাস্ট্রাল ম্যাপ’ বা সিএস ম্যাপ বলেও পরিচিত) তৈরি হয়েছিল ১৯২৫ সালে। আবার ২০২৪ সালে তা সংশোধনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেই ম্যাপে উঠে আসবে একাধিক আধুনিক শহর। থাকবে শিল্পতালুক, শিল্প-করিডর, নতুন রাস্তাঘাট, এক্সপ্রেসওয়ে, রেললাইন ও স্কুল-কলেজ বিল্ডিং-সহ আরও অনেক কিছু। রাজ্যের পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই নতুন সিএস ম্যাপ তৈরি হবে। জমির বর্তমান চরিত্র অনুযায়ী রাজ্যের ভূমি-মানচিত্র বদলের পরিকল্পনা করা হয়েছে। হাই রেজোলিউশন উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে তৈরি করা হবে ম্যাপ। সাহায্য নেওয়া হবে ড্রোন ক্যামেরারও।
পাশাপাশি, প্রতিটি মৌজা ধরে ভেরিফিকেশন হবে রাজ্য সরকারের ‘ডিরেক্টরেট অফ ল্যান্ড রেকর্ডস অ্যান্ড সার্ভে’ বিভাগের তত্ত্বাবধানে। নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, কোনও মৌজা এলাকায় ৩২ শতাংশ পরিবর্তন হলেই নতুন করে সার্ভে করার নিয়ম। এই ১০০ বছরে রাজ্যের প্রতিটি মৌজাই বদলে গিয়েছে। রাজারহাট-নিউ টাউন-বিধাননগর যেমন আধুনিকমানের শহর হয়ে উঠেছে, পরিবর্তন ঘটেছে মালদহ-মুর্শিদাবাদে-বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতেও। জমির ম্যাপ সংশোধন না হওয়ায় উন্নয়নের পরিকল্পনার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয় প্রশাসনকে। নতুন সিএস ম্যাপ তৈরি হলে সেই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যাবে। কৃষিজমি থেকে শুরু করে আবাসন, জলাভূমি, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, রেললাইন, এক্সপ্রেসওয়ে, শিল্পতালুক, সব তথ্য উঠে আসবে ভূ-মানচিত্রে।
এছাড়া করা হবে ভেক্টর সার্ভেও। বোঝা যাবে, মশার বংশবৃদ্ধি থেকে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া এবং চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাবের বিষয়গুলিও। জানা গিয়েছে, তিন ধাপে এই সমীক্ষা চালানো হবে। প্রথম পর্বে সমীক্ষা হবে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং পূর্ব বর্ধমানে। দ্বিতীয় পর্বে পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং তৃতীয় পর্বে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ এবং মুর্শিদাবাদে। রাজ্যে বর্তমানে মোট মৌজার সংখ্যা ৪২ হাজার ৩০২টি। এর মধ্যে অনেক মৌজায় দ্বীপাঞ্চল, পাহাড়ি এলাকা রয়েছে। সেক্ষেত্রে একটি মৌজার জন্য একাধিক মানচিত্র তৈরি হবে। ৬৮ হাজার ৪৫৩টি সিএস ম্যাপ তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য।