নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা : ‘ উমা ‘ — ছবির মিত্তিরমশাই ছেড়ে গেলেন নাট্যমঞ্চ, নাটক লেখার খাতা পেন আর অভিনয়। মঙ্গলবার সকাল ৮ :৫০ নগদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন কয়েকদিন ধরেই। এছাড়াও দোসর ছিল সোডিয়াম- পটাশিয়ামের ভারসাম্যহীনতা ও বার্ধক্যজনিত কষ্ট। যেই হাসপতালে তাঁকে ভর্তি করা হয় সেখানেই শূন্যতা রেখে চলে যান । বিশ্বখ্যাত বাঙালি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের অন্যতম দুই ছবি ‘গণশত্রু’ ও ‘ ঘরে বাইরে’- তে অভিনয় করেন ।
তবে তপন সিনহার ‘বাঞ্চরামের বাগান’ হয়ে ওঠে তাঁর পরিচয়পত্র। তিনি ছিলেন তাঁর মা বাবার প্রথম সন্তান। দেশভাগ নিজের চোখে দেখেছিলেন তবে বালক বয়সে তা হয়তো নিছকই খাম খেয়াল বা রাষ্ট্র নেতাদের মশকরা বলে মনে হয়েছিল তাঁর। তাই সারা জীবন নিজেও কৌতুক মিশ্রিত ব্যক্তিত্ব ও নাটক লিখেওছেন, করেছেন অভিনয়ও। ‘সাজানো বাগান’ , ‘নরক গুলজার’ – এর অভিনীত ছবির কোনো চরিত্ররা জীবনের কোনো মূহুর্তেই রসবোধকে হারিয়ে ফেলেন না। স্কুলজীবন থেকেই শুরু করেছিলেন নাটক। পরে বিশ্বভারতীতে অধ্যাপনায় যোগ দেন দর্শনের অধ্যাপক হিসেবে। এরপর ‘ সুন্দরম ‘ নাটকের দলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই নাট্যকার নির্দেশক ও অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তবে আজই সমাপ্তি ঘটলো সেই রসবোধের।
১৯৮৫ সালে পেয়েছেন সেরা নাট্যকার হিসেবে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার। বেশ কিছু দিন আগে অসুস্থতার কারণে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক বলে জানায় চিকিৎসকরা। ডিমেনশিয়া সহ ব্লাড প্রেশার, কিডনির অসুখ, সিওপিডি ও কঠিন হার্টের রোগে জর্জরিত ছিলেন অনেক দিন ধরেই। পরপর বাইপাস সার্জারি ও পেসমেকার বসেছে বুকে। হাসপাতালের ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল তাঁকে।উমা ছবিতে তার চরিত্রের বিখ্যাত লাইন ‘ মাস্টারপিস ‘ – এর বিবরণ যেন নিজের গোটা জীবন ধরে বুঝিয়ে গেলেন।