বাংলার নিজের খবর,বাঙালির খবর

বিক্ষোভে উত্তাল মণিপুর! দিল্লি ফিরলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ

নিজস্ব প্রতিনিধি : বেশ কিছুদিন যাবৎ উত্তেজনার রোশে পুড়ছে মণিপুরের ইম্ফল উপত্যকা। ছ’টি দেহ উদ্ধারের পর থেকে মেইতেইদের বিক্ষোভ চলছে সেখানে। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে মহারাষ্ট্রে ভোটপ্রচারের কর্মসূচি বাতিল করে রবিবার দিল্লি ফিরে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।শনিবার মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পৈতৃক বাড়ি সহ ইম্ফলে তিন মন্ত্রী এবং ছ’জন বিধায়কের বাড়িতে হামলার আগুন ধরানো হয়েছে বলে অভিযোগ। এরপরই মহারাষ্ট্রে প্রচারের কর্মসূচি বাতিল করে দিল্লি আসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

 

ঘটনায় মেইতেই গোষ্ঠী অভিযোগ করে অন্য এক কুকি গোষ্ঠীর জঙ্গিরা অপহরণ মেইতেই গোষ্ঠীর তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে। এরপরেই নাকি তাঁদের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁরা একই পরিবারের সদস্য ছিলেন বলেও জানিয়েছেন। যদিও মণিপুর সরকারের তরফে উদ্ধার হওয়া দেহের পরিচয় নিয়ে এখনও সরকারিভাবে কিছু প্রকাশ করা হয়নি। এই বিষয়ে প্রশাসনিক সূত্রে খবর, শনিবার পিডব্লিউডি মন্ত্রী গোবিন্দাস কন্ঠৌজাম, বিজেপি বিধায়ক ওয়াই রাধেশ্যাম, বিজেপি বিধায়ক পাওনাম ব্রজেন, কংগ্রেস বিধায়ক টিএইচ লোকশ্বরের বাড়িতে আগুন ধরানো হয়েছে।

 

সে সময় মন্ত্রী, বিধায়ক এবং তাঁদের পরিবারের কেউই বাড়িতে ছিলেন না। ফাঁকা বাড়িতে ঢুকে মেইতেই বিক্ষোভকারীরা প্রথমে জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন। পরে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেন বলেও অভিযোগ। ইম্ফল পূর্বে লুয়াংশাংবামে মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের পৈতৃক বাড়িতেও আগুন ধরানো হয় এদিন। পরিস্থিতি সামল দিতে সেনাবাহিনী এবং অসম রাইফেল্‌সের জওয়ানদের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভ দমন করতে রবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হচ্ছে পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর পক্ষ থেকে।

 

এরই মাঝে আবারও মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন যাওয়ার পথে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে লোহার রড ফেলে অবরোধ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। হামলাকারীদের হুশিয়ারি দিয়েছেন, জিরিবাম জেলায় ছ’জনকে খুনের সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। জিরিবাম ছাড়াও এখন ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিমে কার্ফু জারি করা হয়েছে। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে, ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, বিষ্ণুপুর, চূড়াচাঁদপুর-সহ মোট সাত জেলায়। গোটা ইম্ফল উপত্যকা থেকে মোট ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই এলাকা থেকে একাধিক পিস্তল, কার্তুজ এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ।

 

বিক্ষোভের ঘটনার সূত্রপাত গত সপ্তাহে যখন মণিপুরের জিরিবামে কুকি জঙ্গি এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের মধ্যে গুলি যুদ্ধ চলে। অভিযোগ, সেই সময়েই একদল কুকি জঙ্গি মেইতেই সম্প্রদায়ের তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে অপহরণ করে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ যায় ১০ কুকি জঙ্গি। এক জওয়ানও আহত হয়েছিলেন গুলি যুদ্ধে । যদিও কুকি সম্প্রদায়ের বলেছে, নিহত ১০ জন ছিলেন ‘গ্রামের স্বেচ্ছাসেবী’।

 

এদিকে আবার তাঁদের দেহ মিজ়োরামে নিয়ে যেতে চেয়ে গত সোমবার থেকে শিলচরের হাসপাতালের মর্গ ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন কুকিরা। শনিবার সকালে পুলিশ ১০ জনের দেহ নিয়ে কুকি অধ্যুষিত চুরাচাঁদপুরের দিকে রওনা হলে সেখানে তাঁদের ঘেরাও করেন কুকিরা। বিক্ষোভ দমন করতে পাল্টা লাঠি চালায় পুলিশ। তাঁদেরই মধ্যে ছ’জনের দেহ উদ্ধার ঘিরে শুরু হয় মেইতেইদের বিক্ষোভ।

মিডিয়া
16,985FansLike
2,458FollowersFollow
61,453SubscribersSubscribe
Must Read
Related News