ঝাড়খণ্ড নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হতেই বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায় ঝাড়খণ্ডের বাঙালিদের অভিনন্দন জানান। ঝাড়খণ্ড নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিবৃতে গর্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ঝাড়খণ্ড রাজ্য গঠন ছিল বিহার ও হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বাঙালি ও আদিবাসীদের ঐক্যের ফল। এ.কে রায় থেকে শুরু করে আজকের সুপ্রিয় ভট্টাচার্য সেই ঐক্যের ধারার মাইলফলক। পূর্ব সিংভূম, সাহেবগঞ্জ, পাকুড়, ধানবাদ, বোকারো, জামতারা, দুমকা, সরাইকেলার বাঙালিরা এবার সেই ঐতিহাসিক ঐক্য ফেরত এনেছে বাঙালি- বিদ্বেষী, হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে। দিল্লীর গুজরাটি প্রভুরা বাংলা থেকে শুভেন্দু, মিঠুন টাইপের কিছু জাতিদ্রোহীদের নিয়ে গিয়ে এসব এলাকায় প্রচার করিয়েছিল। ভেবেছিল বহিরাগত হিন্দিভাষীর সাথে বাঙালিকে জুড়ে দিলে কেল্লা ফতে। সেটা হয়নি। ঝাড়খণ্ডের এইসব জেলায় বাঙালির সংগঠিত বিজেপি বিরোধী ভোট নির্ণায়ক ভূমিকা রেখেছে হিন্দি সাম্রাজ্যবাদকে রুখে দেওয়ার সংগ্রামে। পশ্চিমবঙ্গ যখন উত্তাল বাঙালিকে বাংলা বলার জন্য বাংলাদেশী দাগানোর ঘটনা নিয়ে, একই রকম বাঙালি কে “বাংলাদেশী” দাগানোর লাইনে প্রচার করেছিল হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী বিজেপি ঝাড়খন্ডে, মূলত হিন্দিভাষী ভোট এককাট্টা করতে। সেটায় তারা সফল, কিন্তু ঝাড়খণ্ডের ভূমিপুত্ররা, অর্থাৎ আদিবাসী ও বাঙালি, তারাও এক হয়ে গেছে।
ফলাফল – বাংলার সীমান্তে ও বাংলার মধ্যে, দুই জায়গাতেই বাংলা ও বাঙালির শত্রু হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী বিজেপি পরাস্ত।
ঝাড়খণ্ডের বাঙালির ভবিষ্যত আদিবাসীদের সাথে ঐক্যে। ঝাড়খণ্ডে বাঙালি বহিরাগত না। বাংলার একাধিক জেলা প্রথমে ব্রিটিশ ও পরে নেহেরু ও টাটা বিহারে যুক্ত রাখে খনিজ সম্পদ লুঠ করতে। ফলে এসব জায়গায় ১৯৪৭-এর পর থেকে বাঙালি জনশতাংশ কমেছে। বেড়েছে হিন্দি। কিন্তু নিজের মাটি পুরোপুরি হাতছাড়া হবার আগে আদিবাসী ও বাঙালির এই ঐক্য রুখে দিয়েছে দিল্লীর অশ্বমেধের ঘোড়াকে।
ভারতে বাঙালির অধিকার আদায়ের জাতীয় সংগঠন বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঝাড়খণ্ডের ভূমিপুত্র বাঙালিদের জানাই রক্তজবা শুভেচ্ছা। এবার সময় হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের বাঙালি দালালদের চিহ্নিত করে ঝাড়খণ্ডের বাঙালির সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করা। বাংলা পক্ষ ঝাড়খণ্ডে একাধিক বাঙালি সংগঠনের সাথে সংহতিপূর্ণ জাতীয় ভ্রাতৃত্বের সম্পর্কে জড়িত এবং ঝাড়খণ্ডে বাঙালির অধিকারের লড়াইতেও অংশগ্রহণ করেছে। আগামী দিনে এই সম্পর্ক নিবিড় হবে আরো।
নেহেরু, ইংরেজ, বিহার ও টাটার তৈরী এই কৃত্রিম পশ্চিমবঙ্গ- ঝাড়খণ্ড সীমান্ত বাঙালিদের আলাদা করে রাখতে পারবে না।
ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতা ও ঝাড়খণ্ডের আগামী মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন বাবুকে জানাই সংগ্রামী ভূমিপুত্র অভিনন্দন। আপনি অবিলম্বে ১৯৩২ খতিয়ানের ভিত্তিতে ভূমিপুত্র চিহ্নিত করে ভূমিপুত্র অধিকার সুনিশ্চিত করুন।”